অংবাচিং মারমা রুমা (বান্দরবান): বান্দরবানে রুমা উপজেলায় রুমা দেব্ব বৌদ্ধ বিহারের পরিচালনা কমিটি ও জায়গায় সংক্রান্ত নিয়ে অদ্যবধি বিরোধ ছিল। এই বিরোধ গত ৫ এপ্রিল ২০২২ বিহারের গেইটে বড়ুয়া পাড়া নাম ফলক লেখাকে মুছেই দেওয়া হয়। এই নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বড়ুয়া বাসীরা ।
এতেই রুমা বাজার ব্যবসয়ি কমিটি অঞ্জন বড়ুয়া নেতৃত্বে বিপ্লব বড়ুয়া (আরমান),খোকনের ছেলে হৃদয় বড়ুয়া সহ ৩০ জনের বেশি ১ম বারের হামলা চালাইতে লাগলো তবে সেইখানে দায়িত্বরত পুলিশের বাধা মুখের হামলায় চালাতে পারিনি বলে জানান পলিতং পাড়া বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ। গত-৬ এপ্রিল বান্দরবানে রুমা উপজেলা রুমা দেব্ব বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ উঃ চাইন্দাসারা মহাথের, নাইন্দাসারা মহাথের,উঃ তেচিংদা মহাথের, রুমাচর পাড়া বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ উঃ চাইন্দিয়া ওয়েন্দা থের এই চার ভিক্ষু ওপর শারিরিক আঘাট লাঞ্চিত হামলা করা হয়েছে। পরে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক হস্তক্ষেপের বড়ুয়া ও মার্মা জনগোষ্ঠীর উভয় পক্ষের আগামী রবিবারের মিমাংসার কথা ছিল। বেলা গড়তে উভয় পক্ষেই কথা কাটাকাটি মাধ্যমে হাতাহাতিতে জরিয়ে যায় পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেওয়া হয়। এতেই মার্মা জনগোষ্ঠীদের দাবি পুলিশ প্রশাসন উপস্থিতি তে আমাদের ভিক্ষু উপর হামলা করেছে বলে বড়ুয়া সম্প্রদায় উপর দাবি তুলে ।
বিহারাধ্যক্ষ সিনিয়র ভিক্ষু উঃ চাইন্দাসারার ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নিয়ে আজ (৭এপ্রিল ২০২২)রোজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা দিকে রুমা বাজারে এক বিশাল মৌন মিছিল এবং মানববন্ধন করেছে রুমায় সংখ্যাগুরু মার্মা সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। রুমা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে বিহারের ভিক্ষু ও শ্রমণদের পাশাপাশি দুর্গম বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজারের অধিক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মার্মা জনগোষ্ঠীর এ মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন । এসময় রুমা উপজেলা মারমা ওয়েলফেয়ার সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক শৈহ্লাচিং মার্মা সঞ্চালনায় মানববন্ধনের বক্তব্য রাখেন,পাইন্দু হেডম্যান পাড়া বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ,পলিতং পাড়া বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ,মারমা ওয়েলফেয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রুইবেঅং মার্মা,১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মার্মা,সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার চাশৈহ্লা মার্মা,রুমা উপজেলা মারমা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সভাপতি উথোওয়াচিং মার্মা ,মহিলা নেত্রী উমেসিং মার্মা প্রমূখ। বক্তারা বলেন, মার্মা আর বড়ুয়া সম্প্রদায় একই বুদ্ধ ধর্মের বিশ্বাসী হলেও বড়ুয়া সম্প্রদায় বুদ্ধ ধর্মের নামে কলংক। এরা নিজেদের গুরু বুদ্ধ ভিক্ষুকের উপর হামলায় প্রমান করে তাদের সাথে মারমাদের বিশ্বাস এক নয়। এরা দুস্কৃতিকারী জনগোষ্ঠীর । বড়ুয়া সম্প্রদায়ের দোকান থেকে পন্য ক্রয়/বিক্রয় আজ থেকে বর্জন করতে হবে। এরা পন্য মধ্যে বিষক্রিয়া ওষুধ মিশিয়ে মার্মা জনগোষ্ঠীর উপর প্রতিশোধ নিবে। কেউ পন্য ক্রয় করে প্রমান মিললে সামাজিক ভাবে বিচ্যুতি সহ ক্যায়াং অংশগ্রহণ মূলক থেকে গ্রহণ করা হবে না। আরো বলেন, পুলিশ প্রশাসন উপস্থিতিতে ভিক্ষু উপর হামলা করেছে তাতে নিঃসন্দেহে প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনা বলে মন্তব্য করেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলা কারি অঞ্জন বড়ুয়া,রাখাল বড়ুয়া,আরমান বড়ুয়া, ছোটন,নয়ন,উপজেলা চেয়ারম্যানের শালা মিন্টু বড়ুয়া,সহকারী শিক্ষক রুবেল বড়ুয়াদেরকে গ্রেপ্তার করতে আল্টিমেটাম দিয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে।
গ্রেপ্তার করা না হলে বিক্ষোভ মিছিল সহ হরতাল মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছেন মানববন্ধনের বক্তারা। একই সাথে শুধু বড়ুয়া সম্প্রদায়দের নিরাপত্তা দিয়ে বিহারে অবস্থানরত ভিক্ষুদের নিরাপত্তা সহ মার্মাদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এতেই গ্রেপ্তার বিষয়ে রুমা থানা অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক বলেন কোন অভিযোগ বা মামলা না হওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনা। অভিযোগ,মামলা হলে সেটা অন্য বিষয় বলে জানান। আহত ভিক্ষু উঃ চাইন্দাসারা মহাথের কে রুমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর অবস্থায় নিয়ে বেশি আহত হওয়ায় বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানান। রুমা দেব্ব বৌদ্ধ বিহার কমিটি সভাপতি ও অগ্রবংশ অনাথালয় আশ্রমে নির্বাহী পরিচালক উঃ নাইংদিয়া থের বললেন আগামী ২৪ ঘন্টা মধ্যে মানববন্ধনের বক্তারা বলেন, মার্মা সম্প্রদায়ের দুঃসময়ের তথা ক্রান্তি লগ্নের মার্মা জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি হিসেবে উহ্লাচিং মার্মা (চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ) ও ২নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মার্মাকে কাছে পাইনা, কোন ভুমিকা গ্রহণ করতেও দেখা যায়নি ! তাই মারমা সমাজ হতাশ সাথে তাদের বয়কট করা সময়ের দাবি মাত্র।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।